Tuesday 31 January 2012

56Th pOst : আনা আখমাতোভা-র কবিতা

আনা আখমাতোভা-র কবিতা

ক্লিওপেট্রা

'আমি বাতাস ও আগুন...' শেকসপিয়র


অ্যান্টনির মরা ঠোঁটে আগেই ও খেয়েছিল চুমু
সিজারের পায়ে পড়ে হাঁটু গেড়ে নিয়েছিল কেঁদে।
চাকরেরা বিশ্বাসঘাতক। মিইয়ে-আসা গাঢ় অন্ধকারে
ওকে হেরে যেতে দেখে রোমের ইগলপাখি উল্লাসে বাজাচ্ছে ভেরি।

ওর কমনীয় রূপে-বাঁধা শেষতম লোকটি ঘরে ঢোকে,
ঋজু ও রাজকীয়। নিজেরি রানির সামনে তোতলায় :
"দাসী-গোলামের মতো হাঁটাবে তোমাকে রাজপথে, কেননা বিজয়ী।"
শুনেও ও শুয়ে থাকে, হাঁসের মতন গ্রীবা, শান্ত গরিমায় ।

ভোর হলে শেকলে বাঁধবে ওর ছেলেমেয়েদের। কিছু ভালোলাগা
পৃথিবীতে রয়ে গেছে ওর : এই লোকটির সাথে রসিকতা।
তারপর ছেড়ে দেবে শেষ করুণার মতো বিষধর
শ্যামল বুকের মাঝে আলতো-হাতে কালো জীবটিকে।







মৃত্যুকে

জানি তুমি আসবেই। তাহলে এ-প্রতীক্ষা কেন ?
তোমার জন্য আমি পথ চেয়ে; ফুরিয়ে গিয়েছে সব কাজ।
আশার আলোক কবে নিভে গেছে। দরজা রেখেছি খুলে
তোমার নামের এক সরল বিস্ময় আসবে সে-মায়ায়।
অতএব যে-আদল নিতে চাও নাও; ছুঁড়ে মারো
তোমার বিষাক্ত বোমা আমার বাসা লক্ষ্য করে,
কিংবা পেশাদার খুনি-গুন্ডার লাঠির ঘায়ে থ্যাঁতা করো,
অথবা কন্ঠে ঠেসে দাও আন্ত্রিক-জ্বরের বিষ-ধোঁয়া,
যদি তুমি তা-ই চাও, ঘুম পাড়াবার গল্প হয়ে
অসংখ্য নিরপরাধ যে-ভাবে তোমায় চেনে, এসো:
গুপ্ত পুলিশের নীল টুপিখানা দেখাও আমাকে। ভয়ে কাঠ
মুখে রক্ত উবে-যাওয়া কাজের লোকের হাত কাঁপে;
আমারো পরোয়া নেই। এনিস নদীর স্রোত বয়ে যায়,
মাথার ওপরে জ্বলে উত্তরের তারা
আর প্রিয় চোখ জুড়ে পুরোনো নীলাভ আলো
শেষতম আতঙ্কের জন্য যশোহীন।




আমার কেউ নয় ওরা যারা দেশ ছেড়ে চলে যায়


আমার কেউ নয় ওরা যারা দেশ ছেড়ে চলে যায়
শত্রু আর লুটেরার হাতে যায় দেশটাকে ছেড়ে।
ওদের প্রথাগত প্রশংসায় আমি কান দিই না কখনও।
ওরা সব গাইবে বলে আমার কোনও গান নয়।

দেশত্যাগীদের জন্য আমি কষ্ট পাব চিরকাল।
কয়েদির মতো কিংবা যেন আধমরা,
যে-পথে তোমরা ঘোরো অন্ধকারে, ভবঘুরে-দল,
তোমার বিদেশি অন্নে তেঁতোঘূণ ঠাসা।

এখানে স্বদেশে রোজ অগ্নিকান্ড ঘটেই চলেছে
খেয়ে ফেলছে বাকি যৌবন; আমরা এগোই--
আমাদের থ্যাঁতলানো দেহ কোনো পরোয়া করেনি
একটা আঘাতকেও দেয়নি থামিয়ে।

জানি পরে কোনোদিন চেতনার আগমন হবে
প্রতিটি মুহূর্তের ব্যথাকে তা ন্যায্যতা দেবে।
আমরা সবাই এ-জগতের কান্নাহীন লোক।
গর্বে বুক ভরে যায় আমাদের। আমরা সাধারণ।

Wednesday 11 January 2012

অ্যালেন গিন্সবার্গ-এর হাইকু

দাড়ি কামানো ছেড়ে দিয়েছি
কিন্তু যে-চোখ আমায় দেখছিল
রয়ে গেছে আয়নায়


পাগলটা
সিনেমা-হল থেকে বেরোল
লাঞ্চটাইমের পথ


যুবকদের শহর
তাদের গোরস্হানে
আর এই শহরে


পাশ ফিরে
শূন্যতায়
আমার নাকের শ্বাস


পনেরো তলায়
কুকুরটা হাড় চিবোচ্ছে
রাস্তায় ট্যাক্সি থামল


ছাদের ওপর চাঁদ
বাগানে পোকার ঝাঁক
এ-বাড়িটা ভাড়া নিয়েছি


বারান্দায়
হাফ প্যান্ট পরে
যদিও বৃষ্টিতে