Saturday 30 March 2013

68Th pOsT : হোর্হে লুই বোরহেস-এর হাইকু



চাঁদের আলোয়
দীর্ঘতর ছায়া
মিশে এক হয়
এ-ই কি নিয়ম
আলো নিভে গেল
নাকি জোনাকি
সুরের মূর্ছনা থেকে দূরে
পাপিয়া জানে না
কে তোমার শুশ্রুষা করে
বয়স্ক হাত
এখনও আঁকছে
ভোলবার কথা

Tuesday 19 February 2013

67Th pOsT : নাগার্জুন


নাগার্জুন হিন্দি ও মৈথিলী ভাষার কবি । প্রকৃত নাম বৈদ্যনাথ মিশ্র ( ১৯১১ ১৯৯৮ ) । বিহারের মধুবনী জেলায় ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম । বেনারস ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত, পালি ও প্রাকৃত পড়েন । কলকাতায় তিনি লেনিনবাদ ও মার্কসবাদের দ্বারা প্রভাবিত হন এবং ফিরে গিয়ে কৃষক আন্দোলনে যোগ দেন । ১৯৩৫ সালে শ্রীলঙ্কায়  গেলে সেখানে বৌদ্ধধর্মে গ্রহণ করেন । বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে তিনি নাগার্জুন নাম নেন । তার আগে তিনি  ‘যাত্রীছদ্মনামে লিখতেন । ১৯৩৭ থেকে ১৯৪২ সালের মধ্যে সে-সময়ের ব্রিটিশ সরকার তাঁকে বেশ কয়েকবার কারাদণ্ড দেয় । এমারজেনজসির সময়েও তাঁকে জেলে পোরা হয় । চিরকেলে ভবঘুরে ও প্রতিবাদী এবং প্রতিষ্ঠানবিরোধী নাগার্জুন ভারতের সাহিত্য অকাদেমি ও সরকার দ্বারা সেকারণে অবহেলিত ছিলেন । তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর সম্পর্কে বিদ্যায়তনিক গবেষণা ও নতুন প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ তাঁকে হিন্দি সাহিত্যের অগ্রগণ্য কবিদের অন্তর্ভুক্ত করেছে ।


কাল আর আজ
কাল পর্যন্ত তো
তোমায় গালমন্দ করত
হতাশ চাষি
.
কাল পর্যন্ত তো
ধুলোয় চান করত
চড়ুইপাখির দল
.
কাল পর্যন্ত তো
পাথুরে হয়েছিল
বৈভবী খেতের মাটি
.
কাল পর্যন্ত তো
গুটয়ে-সুটিয়ে ছিল ব্যাঙ
আকাশ ছিল বদমেজাজে উদাসীন
.
আর আজ
ওপর পানে টাঙানো
তোমার তাঁবু
.
আর আজ
জলের তাথই জুড়ে
ফোঁটা আর ফোঁটাবউয়ের ঘুঙুর
.
আর আজ
শুরু হয়ে গেছে
ঝিঁঝিপোকাদের অবিরাম সানাই
.
আর আজ
কেকাডাকের পেখম মেলে
কেঁপে উঠছে ময়ূর
.
আর আজ
প্রাণ ফিরে এলো
ঝলসানো ঘাসের শিরায়
.
আর আজ
মুখ বুজে ফিরে গেল গ্রীষ্ম
সঙ্গে নিয়ে গেল নিজের লোক-লস্কর
.
আজ্ঞে হ্যাঁ, লিখছি
আজ্ঞে হ্যাঁ, লিখছি
অনেক কিছু ! প্রচুর প্রচুর !!
পাহাড়প্রমাণ লিখে যাচ্ছি !
কিন্তু আপনি সেগুলো পড়তে
পারবেন না…. দেখতেও পাবেন না
আপনি সেসব !
.
আসলে ব্যাপারটা হল এই যে
আজকাল আমি নিজের লেখাও
কই আর পড়ে উঠি ।
নিয়ন আলোর রডে চলকে-ওঠা পংক্তিগুলোর মতন
পরের মুহূর্তেই
হারিয়ে যায়
চেতনার কি-বোর্ডে ওগুলো
কেবল কয়েক সেকেন্ড
টিকে থাকে….
কদাচি নিজের এই লেখালিখি
কাগজের পাতায়
নামানো সম্ভব হয়
স্পন্দিত সংবেদনের
ক্ষণভঙ্গুর শিকল জুড়ে
ওই প্রান্তে
পোঁছে দেবার কাজ
বাপ রে, না জানি কত না কঠিন !
মশাই আপনি তো মোটা টাকার মাসিক
বেতনভোগী উঁচু পদের লোক !
মনে-মনে তো হাসবেনই ।
ভাববেন এ আবার
কোনো কাজ নাকি ; কী আবোল
তাবোল ভাবনাচিন্তার
মিহিন কথাবার্তা কী করে চালিয়ে যায় কেউ—-
এ আবার কোনো কাজের কাজ হল !