Sunday 23 December 2012

66Th pOsT : মিশরের প্রতিষ্ঠানবিরোধী কবি তামিম-আল বারঘুতি


উপহার



আমার জীবন একটি উপহার
যা আমায় দেয়া হয়েছে
আমার শূন্যতম জন্মদিনে
আজকে সেই বাক্সের রঙিন ফিতে খুলে
অনেক জিনিস পেলুম
সবই মামুলি
তবে বেশ বিস্ময়কর
একটা সোনার ঘড়ি
আর সোনায় মোড়া
জীবনের যাবতীয় সময়;
বাক্সের মধ্যে একটা গোলাম-পুতুল
দেখেই হাসি পেল
আমার খুন হবে যাবার ভয়ও চেপে বসল
তা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে
দুটি ফুটফুটে ডলপুতুল,
একটি খেলনা
অন্য পুতুলটি তা নয়;
কয়েদির মুকুট আর রাজার জন্য হাতকড়া-বেড়ি, ইস্কাপনের গোলামও পেলুম
উল্টে দ্যাখো
একই রকম দেখায়;
বই পেলুম কয়েকটা;
একটা ভিডিও টেপ পেলুম যার লেবেলে লেখা রয়েছে:
আরব ইহুদিদের পঞ্চাশবছর ব্যাপী সংঘর্ষ”;
কালির দোয়াতে পেলুম নরক
এবং আরেকটা দোয়াতে স্বর্গ;
রেসের মাঠের আরব ঘোড়া পেলুম
যার সারা গায়ে আঠা মাখানো;
একটা আগুনহীন উনোন পেলুম;
বাক্সের ভেতরে সব জিনিসের তলায়
আমার নাম লেখা একটা শাদা কার্ড রয়েছে,
বাকিটুকু তাতে লেখা হয়নি
জিনিসগুলো নিয়ে কী করব জানিনা!
হে ভগবান তোমাকে ধন্যবাদ জানাই,
কিন্তু এত কষ্ট করার কী দরকার ছিল ?
সব জিনিসগুলো আবার রেখে দিলুম বাক্সের ভেতরে
বন্ধ করে দিলুম
মুড়ে দিলুম মোড়কে
রিবন বেঁধে দিলুম,
তারপর যেই ওপরের দিকে ছুঁড়লুম আকাশে চলে গেল বাক্স
উপহার হয়ে গেল এক ঝাঁক পায়রা
যেগুলোকে আমি সারা জীবন অনুসরণ করব
কী কারণে আমি অমন করলুম ?
আমি সত্যিই জানি না !
( মিশরের রাজধানী কায়রোয় ১৯৭৭ সালে তামিম-আল বারঘুতির জন্ম। ওনার বাবা মুরিদ বারঘুতি ছিলেন প্যালেস্টিনীয় কবি। মা রাদওয়া আশুর ছিলেন মিশরীণ ঔ্পন্যাসিক। প্রতিষ্ঠানবিরোধী রচনাবলীর অজুহাতে তাঁদের মিশর থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে তামিম কায়রোয় গিয়ে পড়াশুনা করেন। কিন্তু তিনিও প্রতিষ্ঠানবিরোধী কবিতা রচনার কারণে মিশর থেকে বহিষ্কৃত হন। ২০০৪ সালে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি এচ ডি করেছেন তামিম এবং ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরব রাজনীতি বিষয়ক ক্লাস নেন। সাম্প্রতিন আরব বিপ্লবে বিভিন্ন দেশে তাঁর কবিতা জনগণের মাঝে পঠিত হয়েছে এবং ইংরেজিতে অনুদিত হওয়া আরম্ভ হয়েছে। বাংলায় অনুদিত কবিতাটি  এবাদুল হক সম্পাদিত আবার এসেছি ফিরে পত্রিকার অক্টোবর ২০১১ সংখ্যা থেকে পুনঃপ্রকাশিত )