Tuesday, 28 February 2012

সিরিয়ার আত্মনির্বাসিত কবি আদুনিস-এর কবিতা : 57Th pOst

হারিয়ে যাওয়া
তোমার বাহুতে হারিয়ে গিয়েছিলুম একবার
আমার দুই ঠোঁট অবরোধে মুগ্ধ
ঝোড়ো বিজয়ের আকুল আকাঙ্খায়
আর তুমি এগিয়ে এলে
তোমার কোমর তখন একজন সম্রাট
তোমার বাহু সৈন্যবাহিনীর আগুয়ান দল
তোমার চোখ লুকিয়ে থাকার জায়গা আর বন্ধু
আমরা মিলিয়ে গেলুম পরস্পরের মধ্যে
                                     হারিয়ে গেলুম দুজনে
                                     প্রবেশ করলুম দাবানলে...
আমি প্রথম পা ফেললুম
আর তুমি পথ মেলে দিলে...

আয়না 
ওর নিজেরই চোখের জলের প্রতিবিম্বে
দুস্হদের যন্ত্রণার গুপ্তচর সে
ওর খামখেয়ালের অভিধার আয়নায়
কবিদের আত্মশ্লাঘা উপভোগ করছে

সূর্য
এখানে ওর আঘাতে রয়েছে সূর্য
নারীটি ওর বিছানায়
তার চোখের পাতার বিয়ে হয়েছে ওর সঙ্গে

গানের মুখোশ
ওর নিজের নামের ইতিহাসে
পাঁকে ডুবে থাকা এক দেশে
যখন ক্ষুধা ওকে কাবু করে
ও নিজের কপাল খেয়ে ফ্যালে
ও মারা যায়
ঋতুগুলো জানতে পারে না কী ভাবে তা ঘটেছিল
গানের অক্ষয় মুখোশের আড়ালে ও হারিয়ে যায়

একমাত্র অনুগত বীজ
জীবনের গভীরে কবরস্হ ও একাই বসবাস করে।

মৃত্যু
এই মুহূর্তগুলোর পরে আসবে সেই ছোট্ট সময়,
আসবে দুরারোহ উৎরাই আর পথ, বারবার।
এই মুহূর্তগুলোর পর বাড়িগুলো বুড়ো হয়ে যাবে,
দিনগুলোর আগুন
নিভিয়ে দেবে বিছানা
আর তারপর মারা যাবে।
আর, বালিশগুলোও মারা যাবে।

একটি পাথর
এই শান্ত পাথরটিকে পুজো করি আমি
যার প্রসন্নতায় আমি দেখতে পাই
আমার মুখ
আর আমার হারিয়ে যাওয়া কবিতা।

হেমন্তের মৃতদেহের জন্য আয়না
দেখেছো কি একজন নারীকে
যে হেমন্তের মৃতদেহ বয়ে বেড়ায়,
নিজের মুখশ্রীকে মিশিয়ে ফ্যালে পাথরপ্রতিমার সঙ্গে
আর বৃষ্টির আঁশ দিয়ে বুনে ফ্যালে
নিজের পোশাক,
যখন জনগণ
ফুটপাতের ছাইগাদায়
স্ফূলিঙ্গের গনগনে শবে রূপান্তরিত ?

নিউ টেস্টামেন্ট
ও এই ভাষা বলতে পারে না
ও এই প্রান্তরের কন্ঠস্বর জানে না...
পাথুরে ঘুমে একজন দৈবজ্ঞ নাকি ?

বহুদূরের ভাষার ভার বইছে ও

ধ্বংসাবশেষের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে ও 
নতুন শব্দাবলীর আবহাওয়ায়,

বিলাপরত বাতাসকে অঞ্জলি দিচ্ছে ওর কবিতা
পালিশ-করা না হলেও কাঁসার মতন সন্মোহক

মাস্তুলের মাঝে ঝলমলে ও এক ভাষা,
অচেনা শব্দের পথদস্যু...