Saturday, 30 June 2012

61sT pOsT : অমৃতা প্রীতম

অমৃতা প্রীতম
(
পাঞ্জাবি ভাষার প্রথম মহিলা কবি, ১৯১৯ - ২০০৫ )

১ আমি

অজস্র সমসাময়িক প্রাণ
কিন্তু "আমি" আমার সমসাময়িক নয়

আমার জন্ম হয়েছে "আমি" বাদ দিয়ে
পুজোর থালায় একটি কলঙ্কিত উসর্গ
মাংসের একটি মুহূর্ত যাকে মাংসের রূপ দেয়া হয়েছে

আর যখন মাংসের তৈরি জিভের এই ডগায়
কয়েকটি শব্দ আসে সেগুলো নিজেদের হত্যা করে ,
যদি তাদের আত্মহত্যা থেকে বাঁচিয়ে তোলা হয়
তাহলে তা নেমে আসে কাগজের ওপর ; সেখানে ঘটে একটি হত্যাকাণ্ড--

বন্দুকের গুলি চলার আওয়াজ
যদি তা আমাকে হ্যানয়তে আঘাত করে
তাহলে আবার তা প্রাগে আঘাত করে আমায়

এক চিলতে ধোঁয়া ওপরে উঠে যায়
আর আমার "আমি" আটমাসের ভ্রূণের মতো মরে যায়;
কখনও কি আমার "আমি" আমার সমসাময়িক হয়ে উঠবে ?

২ ফাঁকা পরিসর

রাজত্ব কেবল দু'রকমের হয়
প্রথমটি তাকে আর আমাকে উভয়কেই তাড়িয়ে দিয়েছিল
দ্বিতীয়টিকে আমরা নিজেরাই ত্যাগ করেছি 

খোলা আকাশের তলায়
আমি আমার নিজের শরীরের বৃষ্টিতে বহুকাল ভিজেছি,
সে নিজের শরীরের বৃষ্টিতে পচেছে বহুকাল

তারপর একদিন সে বছরগুলোর স্মৃতিকে বিষের মতো চেটেছে
আমার হাতদুটি ও নিজের কম্পমান হাত দিয়ে ধরেছে

"
এসো, কিছুদিনের জন্য আমরা ছাদের তলায় বাসা বাঁধি
সামনের দিকে তাকাও, ওইদিকে
সত্য ও মিথ্যার মাঝামাঝি , এক টুকরো পরিসরের দিকে ।"

৩ তোমার সঙ্গে আমার আবার দেখা হবে

তোমার সঙ্গে আমার আবার দেখা হবে
কোথায় কী ভাবে তা জানি না
হয়তো আমি হয়ে উঠব
তোমার কল্পনার উদ্ভাবনাসূত্র
আর হয়তো, ডানা মেলে
তোমার ক্যানভাসে
দেখা দেব এক রহস্যময় রেখা হয়ে, অপলক তাকিয়ে থাকব তোমার পানে

হয়তো আমি সুর্যোদয়ের
রশ্মি হয়ে উঠব,
তোমার রঙগুলো জড়িয়ে ধরবে আমায়
আমি নিজেকে তোমার ক্যানভাসে রাঙিয়ে তুলব
কোথায় কী ভাবে তা জানি না
কিন্তু তোমার সঙ্গে আমার দেখা হবেই

হয়তো আমি হয়ে উঠব ঝর্ণা
আর জল-ফেনার ফোঁটাগুলোকে
তোমার গায়ে মাখিয়ে দেব,
আর আমার শীতল শরীরকে
তোমার উষ্ণ দেহের ওপর বিছিয়ে দেব ।
আমি আর কিছু জানি না
কেবল জানি যে এই জীবন
আমার সঙ্গে-সঙ্গে এগিয়ে যাবে।

যখন শরীর শেষ হয়ে যাবে,
শেষ হয়ে যাবে সব কিছুই :
কিন্তু স্মৃতির আঁশগুলো
শক্ত ঝলকানি দিয়ে বোনা থাকে ।
আমি ওই কণাগুলো কুড়িয়ে
গড়ে তুলব যোগসূত্র,
আর আবার তোমার সঙ্গে আমার দেখা হবে